শুভব্রত মুখার্জি:- এই মুহূর্তে বিশ্ব জিমন্যাস্টিকসের অন্যতম বড় তারকা তিনি। তিনি সিমোনে বাইলস। ২০১৬'র রিও অলিম্পিক্স দিয়ে যার আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। নবীন এক প্রতিভার পারফরম্যান্স মুগ্ধ হয়ে দেখেছিল গোটা বিশ্ব।এরপর মানসিক চাপের সমস্যায় তাঁকে ভুগতে হয়েছে টোকিও অলিম্পিক গেমসে। সেই সমস্ত সমস্যাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে এই মুহূর্তে প্যারিস অলিম্পিক গেমসে আমেরিকার জিমন্যাস্টিকস দলের হয়ে লড়াই করছেন সিমোনে বাইলস। শুধু লড়াই করছেন বললেও হয়ত কম বলা হয়ে যায়। যেভাবে নিজের কাফ মাসেলের চোটকে উপেক্ষা করে জিমন্যাস্টিকসের কোয়ালিফিকেশনের মঞ্চকে কাঁপালেন তিনি তা এককথায় অবিশ্বাস্য।
আরও পড়ুন-কুশল পেরেরার উইকেট নিতেই সুপার কুল সেলিব্রেশন হার্দিকের! জবাব দিতে চাইলেন কাউকে!
চোটকে সঙ্গী করে নিয়েই সিমোনে বাইলস কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে পিছনে ফেললেন গতবারের চ্যাম্পিয়ন সুনিসা লি'কে। কোয়ালিফিকেশন রাউন্ডে বাইলসের স্কোর ৫৯.৫৬৬। যার থেকে অনেকটাই কম স্কোর করেছেন লি। লি'র স্কোর ৫৬.৬৫৫। চোট নিয়েও বাইলস যে এমন পারফরম্যান্স করবেন তা কেউ ভাবতেই পারেননি। জিমন্যাস্টিকসের ম্যাটের পাশে বসে রয়েছেন সিমোনে বাইলস। তাঁর পাশেই রয়েছেন দলের ডাক্তার মার্সিয়া ফাউস্টিন। দুজনকে দেখেই বেশ উদ্বিগ্ন মনে হচ্ছে। এই ছবি দেখে কিছুক্ষণের জন্য হলেও চিন্তায় পড়েছিলেন আমেরিকান জিমন্যাস্টিকসের সমর্থকরা। অনেকের আবার মনে পড়ে যাচ্ছিল তিন বছর আগেকার টোকিও অলিম্পিক গেমসের দৃশ্য। যেখানে বাইলস নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দিতে একাধিক ইভেন্ট থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করেছিলেন। এদিন সেই আশঙ্কা দেখা দিলেও তিনি লড়াই চালিয়ে গেছেন। চোটকে সঙ্গী করেই উপহার দিয়েছেন চোখধাঁধানো পারফরম্যান্স।
আরও পড়ুন-পরের বছরেও ভারতে বড় টুর্নামেন্ট! ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে না গেলে, আসবে তো পাকিস্তান?
২৭ বছর বয়সী বাইলস এবং টিম ডাক্তার ফাউস্টিন এদিন প্যারিস গেমসে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে যান। যখন তাঁরা ফের ফিরে আসেন দেখা যায় বাইলসের বাঁ পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা রয়েছে।ওয়ার্ম আপে ফ্লোর এক্সারসাইজ করার সময়ে এই চোট পান বাইলস।এরপর গোটা দিন তাঁকে জিমন্যাস্টিকসের ম্যাটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলতে দেখা গিয়েছে। এরপর ফ্রান্সের বার্কি এরিনা যে পারফরম্যান্সের সাক্ষী থাকে তা তারা দীর্ঘদিন মনে রাখবে। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কোচ সেসিল ল্যান্ডি পরে জানিয়েছেন যে চিন্তার কিছু নেই। চোট গুরতর নয় একেবারেই।
বার্কি এরিনায় প্রথমেই ব্যালান্স বিমে দাপট দেখান তিনি।১৪.৭৩৩ স্কোর করেন তিনি।তারপরে ফ্লোর ইভেন্টে নামেন বাইলস। সেখানেই তাঁর পায়ে চোট লাগে। বাঁ পায়ের গোড়ালিতে টেপ বাঁধেন ডাক্তার ফাউস্টিন। সেই অবস্থাতেই ফ্লোর ইভেন্টে ১৪.৬৬৬ স্কোর করেন তিনি। তৃতীয় ইভেন্ট ছিল ভল্ট। এদিন ইয়ুরচেঙ্কো ভল্ট দিতে দেখা যায় তাঁকে। ভল্ট ইভেন্টে ১৫.৮০০ স্কোর করেন বাইলস।আমেরিকার জিমন্যাস্টের শেষ ইভেন্ট ছিল আনইভেন বার। সেখানে তিনি ১৪.৪৩৩ স্কোর করেন বাইলস। দেশকে শীর্ষে শেষ করিয়ে বাইলস বার্কে এরিনা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তখনও গোটা এরিনায় তাঁর নামে জয়ধ্বনি ওঠে। এই পারফরম্যান্সের পরেও ছাত্রীকে নিয়ে পুরো সন্তুষ্ট নন লান্ডি। তিনি বলেন 'বাইলস ভাল করেছে। ৫৯.৫ ভাল স্কোর। কিন্তু খুব ভাল নয়। এর থেকেও অনেক অনেক ভাল পারফরম্যান্স করার ক্ষমতা ওঁর রয়েছে ।'প্রসঙ্গত ২০১৬ রিও অলিম্পিক্সে চারটি সোনা জিতেছিলেন। প্যারিসে ব্যক্তিগত ভল্ট ও আনইভেন বারের পাশাপাশি অলরাউন্ড ও দলগত ইভেন্টেও নামবেন তিনি।
2024-07-29T20:17:44Z